রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে বিবর্ণ যার পোশাকের রং- ট্রাফিক পুলিশ 

তারেক ইবনে আজিজ-
প্রকাশিত : রবিবার, ২০২১ নভেম্বর ২১, ০৬:১৮ অপরাহ্ন

বাংলাদেশ পুলিশ এর জেলা পুলিশের একটি বিভাগ হলো ট্রাফিক পুলিশ। জেলা সদরের অভ্যন্তরে যানজট নিরসন দ্বায়িত্ব পালনে সদা তৎপর যে বাহিনী তারা হলেন ট্রাফিক পুলিশ। সারাদিন রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ধুলো- বালি কে সঙ্গী করে নগরের জনগনের দূর্ভোগ কমাতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যায় তারা। সারাদিন ধুলোবালিতে কাজ করতে গিয়ে শ্বাসকষ্ট সাইনোসাইটিস, যানবাহনের বিকট হর্নের কারণে মাইগ্রেন এর মতো জটিল রোগ এর উপস্বর্গ দেখা দেয় এই বাহিনীর বেশিরভাগ ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের মধ্যে।

পোশাকের রং বিবর্ণ হয়ে গেলেও জনগণের সেবায় সদা অবিচল তারা। তবে আমাদের দেশের জনগনের মধ্যে ট্রাফিক আইন না মানার ঘোর প্রবণতা দেখা যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে যারা আইন অমান্য করে তাদেরকে আইন অনুযায়ী কোন পদক্ষেপ নিতে গেলে শুরু হয় নানাবিধ তদবির। ট্রাফিক পুলিশ আইন প্রয়োগ করতে গেলে অমুকের ভাই, তমুকের ভাতিজা এসব কথা নিত্যদিনেই শুনতে হয় তাদের। এছাড়া আরও রয়েছে নানা ধরনের হুমকি। কারো তদবিরে কোন অপরাধীকে ছেড়ে দিলে শুনতে হয় ঘুষ খেয়ে ছেড়ে দিয়েছে।

এ নিয়ে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা পরেছে দোটানায়। সড়কে যানজট থাকলে সবাই নির্দ্বিধায় ট্রফিক পুলিশকে দোষারোপ করলেও সড়ক যানজট মুক্ত থাকলে কেউই বাহবা দেয়না তাদের। তার মধ্য যদি কোন কারণে সিগনাল এ যদি কোন গণ্যমান্য ব্যক্তির গাড়ি আটকায় তাহলে তাদের আত্বসম্মানেও লাগে। একজন সামান্য ট্রাফিক পুলিশ কেন তার গাড়ি থামাবে। কিন্তু সেই গণ্যমান্য ব্যক্তি ট্রাফিক আইন মানছেন কিনা তা কেউই খতিয়ে দেখছে না। তার মধ্য তর্ক বিতর্ক বাক-বিন্ডতা তো আছেই। দেশের সরকারী সকল বিভাগে ডিজিটালাইজেশন এর ছোঁয়া লাগলেও আমাদের ট্রাফিক সিষ্টেমে এখনো খুব একটা ছোঁয়া পড়েনি ডিজিটালাইজেশন এর।

ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা নিজেদের হাত দিয়েই নিয়ন্ত্রন করতে হয় ট্রাফিক সিগনাল। টানা ডিউটির মধ্য বেশিরভাগ সময়টাই দাড়িয়ে করতে হয় তাদের। বসার সুযোগ খুব কমই থাকে তাদের। খাবার খাওয়া, প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দেওয়া সহ ব্যক্তিগত কোন জরুরী কাজ থাকলেও সময়মতো তা করতে পারেনা তারা। নিজ বাড়ি থেকে যদি কোন বিপদের সংবাদও আসে তবুয় সঠিক সময়ে পরিবারের সাথে কথা বলে পারেনা তারা। ছুটির ব্যপারটাও তাদরে ক্ষেত্রে অনান্য পুলিশ সদস্যদের তুলনায় কম। এতো কষ্ট করে সারাদিন ডিউটি করার পরও তাদের কষ্টের শেষ হয় এমনটা না। সবার ধারণা তারা অনেক ঘুষ নেয় তাই তাদের অনেক টাকা কিন্তু বাস্তব চিত্রটা পুরোপুরি ভিন্ন।

বাসায় ফেরার সময় বাজার থেকে বেছে কমদামি মাছটাই খুঁজে কিনতে হয় তাদের। ছেলের আবদারের চকলেট কেনার টাকাটাও থাকেনা বহু পুলিশ সদস্যদের কাছে। কোন ভাবে একটার জায়গায় অন্য একটি দিয়ে বুঝিয়ে রাখে নিজের সন্তানদের। মুখে হাসি রেখে বুঝতে দেয়না সারাদিন তার বাবার সাথে কী ঘটেছিল। নিজের সারাদিনে ক্লান্তি প্রকাশ করেনা সন্তানের কাছে। তবুয় তাদের জীবন কেটে যাচ্ছে জীবনের নিয়মে। আমরা সকলে মিলে যদি ট্রাফিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই আর দেশের সকল বিভাগের মতো করে ট্রাফিক বিভাগও যদি অধুনিকতার ছোঁয়া পায় তবেই হয়তো দেশ যানজট মুক্ত হবে এবং ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের মানবেতর জীবনে একটু হলেও স্বস্তি ফিরে আসবে।


সম্পাদক :  Mr Golam Kabir

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় :
Masjid Baban(1st floor),Cotora,Cumilla-3500,Bangladesh.

Email: cumilla24tv@gmail.com,
For More Info: 01726 012 007
Phone: 081-60099

© Copyright 2021 All Rights Reserved by Cumilla24.tv | Designed & Developed by GFC
Design & Developed by Smart Framework